SITAKUNDU KAMIL MADRASAH
SITAKUNDU,CHITTAGONG. EIIN : 105099
সাম্প্রতিক খবর

প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস

গিরি সৈকত পরিবেষ্টিত প্রাকৃতিক সুপ্রমা মণ্ডিত অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সীতাকুণ্ড। যার বুক চিঁড়ে চলে গেছে মুসলিম শাসক শের শাহ নির্মিত ঢাকা ট্রাংক রোড, যা রাজধানী ঢাকা থেকে ইসলামের প্রবেশদ্বার খ্যাত বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের সাথে মিলন ঘটিয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশ ঘেষে অবস্থান ঐতিহ্যবাহী সীতাকুণ্ড কামিল এম.এ মাদ্রাসা। সীতাকুণ্ড তথা বৃহত্তর চট্টগ্রামের মানুষের জন্য বিশ্বনবী (সঃ) এর প্রতিনিধি স্বরূপ ১৮৫৬ ইংরেজীর ৮ই জুন এক শুভক্ষণে সীতাকুণ্ড উপজেলার বাড়বকুণ্ডের মান্দারীটোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কৃতি পুরুষ মাওলানা ওবায়দুল হক (রহঃ)। পরে এই ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ সুদূর কলকাতা থেকে দ্বীনি শিক্ষা সম্পন্ন করে ১৮৮৬ইং সালে আজকের সীতাকুণ্ড কামিল মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। ইট-সুরকির গাঁথা ভবনটি শতাধিক বছরের পুরাতন এবং ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে সরকারী অনুদান ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আর্থিক সাহায্যে ০৫ (পাঁচ) তলা ভিত্তি দিয়ে ১৩৫ ফুট লম্বা এবং ৪০ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট ভবনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে ১১৭০ জন ছাত্র-ছাত্রী ও ৩২ জন শিক্ষক-কর্মচারী এবং একটি শক্তিশালী গভর্ণিং বডির সমন্বয়ে শিক্ষা কার্যক্রম সূচারুভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। উল্লেখ্য যে, সরকারী জাতীয় দিবস সমূহ যথাযথ মর্যাদার পালন করা হয় এবং উপজেলা পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করে থাকে। নিম্নে তার বিবরণ দেয়া গেল।
  • ১৯৯৪ইং সনে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে উপজেলা, জেলা এবং বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ মাদ্রাসা হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক সনদ ও ক্রেস্ট অর্জন করেন।
  • ১৯৯৬ইং সনে অত্র মাদ্রাসার তৎকালীন উপাধ্যক্ষ মাওলানা ফজলুলবারী উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হন।
  • ১৯৯৮ইং সনে তৎকালীন অত্র মাদ্রসার ১ম মুহাদ্দিস মাওলানা হাদিস আহমদ উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হন।
  • ১৯৯৯ইং সনে তৎকালীন অধ্যক্ষ মাওলানা জামালুদ্দীন মাদানী উপজেলা পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং মুহাদ্দিস মাওলানা হুসাইন আহমদ শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হন।
  • ২০০০ইং সনে তৎকালীন মুহাদ্দিস মাওলানা আতিকুর রহমান উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হন।
  • ১৯৯৮ইং বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র ও সীতাকুণ্ড গণপাঠাগার এর উদ্যোগে জ্ঞান-জিজ্ঞাসা ও সাধারণ জ্ঞানের আসর সীতাকুণ্ড কামিল এম.এ মাদ্রাসা চ্যাম্পিয়ন হয়।
 
প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি ও তথ্যাবলী
ঐতিহ্যবাহী সীতাক- কামিল এম.এ মাদ্রাসাটি ১৮৮৬ইং সালে উপমহাদেশের বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন মরহুম মাওলানা ওবায়দুল হক (র:) প্রতিষ্ঠা করেন। চট্টগ্রামের উত্তর জনপদে এই প্রাচীন মাদ্রাসাটির রয়েছে দীর্ঘ সমৃদ্ধ ইতিহাস যার ৪৫ কিঃ মিঃ পূর্বে নাজিরহাট কামিল মাদ্রাসা ১৫০ কিঃ মিঃ পশ্চিমে হাতিয়া কামিল মাদ্রাসা, ২৫ কিঃ মিঃ দক্ষিণে নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসা এবং ৫৫ কিঃ মিঃ উত্তরে ফেনী কামিল মাদ্রাসা রয়েছে। সীতাকু- কামিল মাদ্রাসায় শুধুমাত্র অত্র এলাকার ছাত্ররা লেখা-পড়া করেনি মীরসরাই, সন্দ্বীপ ও ফটিকছড়িসহ সমগ্র দেশের শিক্ষার্থীরা অধ্যয়ন করেছেন এবং এই মাদ্রাসা থেকে শিক্ষা সমাপ্ত করে বর্তমানে দেশে ও বিদেশে সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে বহু গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত আছেন। অত্র মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠালগ্নে কিছু করুন ইতিহাস রয়েছে ১৮৮৬ইং সনে মাদ্রাসাটি যখন প্রতিষ্ঠা হয় তখন এর অবস্থান ছিল বর্তমান কথাকলি উচ্চ বিদ্যালযের পশ্চিম পার্শ্বে। কিছু ইসলাম বিদ্বেষী ও হিন্দু চরমপন্থী ১৮৮৭ইং সনে প্রথমবার মাদ্রাসাটি জ্বালিয়ে দেয়। এরপর সীতাকু- লালদীঘির দক্ষিণ পাড়ে পুরাতন পৌরভবনের জায়গায় দ্বিতীয়বার প্রতিষ্ঠা করা হয়। হিন্দু ও দুস্কৃতিকারীরা পুনঃরায় ১৮৯০/৯১ইং সনে মাদ্রাসা ঘর সম্পূর্ণরূপে জ্বালিয়ে দেয়। স্বপ্নভংগের মত সীতাকু-বাসী যখন হতাশায় ও বেদনায় অশ্রুসিক্ত তখনও কিন্তু এই ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ থেমে যাননি। তিনি সীতাকু-ের জনগণকে নিয়ে সভা করলেন এবং শপথ করলেন আরো  মজবুত করে পাকা ভবন নির্মাণ করবেন। যার ফলশ্রুতিতে ১৮৯২ইং সনে বর্তমান জায়গায় সীতাকু- সিনিয়র মাদ্রাসা হিসেবে ভবন স্থাপন করেন। উল্লেখ্য যে, ভবন নির্মাণকালীন ১৯১৪ইং সনে সীতাকু-ের হিন্দু জমিদার রায় অধিকারী এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করে এবং মামলা চলাকালীন দুই বৎসর নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকে। এই মামলা শেষ পর্যন্ত সুপ্রীমকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। তখন সুপ্রীমকোর্ট ছিল ল-নে। মাওলানা ওবায়দুল হক সাহেবের আবেদনের প্রেক্ষিতে সুপ্রীমকোর্টের বিচারপতি সীতাক-বাসীর সুবিধার্থে বর্তমান মাদ্রাসার জায়গায় সুপ্রীমকোর্টের এজলাস বসে। যেখানে সুপ্রীমকোর্টের জজ সাহেব ১৯১৭ইং সনে ঐ এজলাসে বসে বিচারকার্য সমাধান করেন। বিচারের ফলাফল মাওলানা ওবায়দুল হক সাহেবের পক্ষে যায়। 
 অবস্থান       ঃ সীতাকুণ্ড উপজেলা সদরে অবস্থিত।
 মান               ঃ কামিল (এম.এ)।
 ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা      ঃ ১১৭০ জন।
 শিক্ষক সংখ্যা          ঃ এমপিওভূক্ত ২০ জন এবং নন-এমপিও ০৩ জন।
 লাইব্রেরীয়ান        ঃ ০১ জন।
 কর্মচারী        ঃ ৩য় শ্রেণী- ০৩ জন ও ৪র্থ শ্রেণী- ০৪ জন।
 অবকাঠামো      ঃ ১৩৫ ফুট লম্বা ৫তলা ভিত্তির একাডেমিক ভবন ও ৬০ ফুট লম্বা ১ তলা (একাডেমি ভবন)। 
 মসজিদ      ঃ দৈর্ঘ্য ৬৩ ফুট প্রন্থ ৪৮ ফুট নির্মানাধীন।
 ক্যাম্পাসের আয়তন ঃ ০৫ (পাঁচ হাজার) বর্গফুট।
মার্কেটের আয়তন      ঃ ০৩ (তিন হাজার) বর্গফুট।
ওয়াকফ/দানকৃত জমির পরিমাণ  ঃ ১৩ একর।

পরিকল্পনা
  • পড়ালেখার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে ইবতেদায়ী পর্যায়ে নূরানী কি-ারগার্টেন পদ্ধতিতে শিক্ষাদানের পরিকল্পনা রয়েছে।
  • দাখিল ও আলিম পর্যায়ে বিজ্ঞান বিভাগ এবং ফাযিল ও কামিল পর্যায়ে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।